অমলেন্দু ধর রচিত ‘উপলব্ধি’: একটি পাঠ-প্রতিক্রিয়া

রাজ্জাক হাওলাদার

সম্প্রতি ‘উপলব্ধি’ নামে একটি বই পড়লাম। বইটির লেখক কানাডা নিবাসী অমলেন্দু ধর। তাঁর সাথে আমার অনেকদিনের পরিচয়। কিন্তু তাঁর জ্ঞান গরিমা ও পাণ্ডিত্য সম্পর্কে আমার খুব বেশি জানা ছিল না। এ ছাড়া তিনি যে একজন সুলেখক, এ সম্বন্ধে একেবারেই ধারণা ছিল না।

চারশত বাইশ পৃষ্ঠার বইটি সৌজন্য কপি হিসেবে মন্ট্রিয়লে বসবাসরত তাঁর মেয়ে মৌসুমী ও জামাই কল্লোলের মাধ্যমে হাতে পেয়েছি। এত বড় বই দেখে আজকাল অনেক ভালো পাঠকও ঘাবড়ে যান। এর চেয়ে বড় এবং বহু পৃষ্ঠার বই পড়ার অভ্যাস আমার আছে। তা সত্ত্বেও একটুখানি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম, বিশাল এই বইটি পড়ে শেষ করতে পারব কি না। এর কারণ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মানসিক উদ্বেগ অস্থিরতা।

অবাক কাণ্ড! বইটি পড়তে শুরু করে আর থামতে পারছিলাম না। থামতে চাইলেও থামা যাচ্ছিল না। অজান্তেই লেখার পর লেখা, পাতার পর পাতা আমাকে নিরন্তর টেনে নিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের সিলেট থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। অবশেষে টানা তিনদিন পড়ার পর বইটি শেষ করলাম।

রাজনীতি ও ধর্মনীতি থেকে শুরু করে হেন কোনো বিষয় বস্তু নেই যা নিয়ে লেখক আলোকপাত করেননি। বিশেষ করে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও তার আশপাশের অঞ্চলের জ্ঞানী গুণী বিভিন্ন মানুষজনের ভালো মন্দ স্বভাব চরিত্র, ভিলেজ পলিটিক্স এবং শিক্ষাঙ্গন সম্বন্ধে সংক্ষেপে সুন্দর একটি ধারণার অবতারণা করেছেন বইটিতে। সর্বোপরি, তিনি যাঁদের কাছ থেকে সামান্যতম উপকার ও ভালোবাসা পেয়েছেন, তাঁদের কাছে পদে পদে ঋণ স্বীকার করেছেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এ জন্যই বোধ হয় বইটির নামকরণ করেছেন ‘উপলব্ধি’।

তাই সিলেটের জ্ঞানী গুণী ও সাধারণ মানুষের বইটি পড়া খুবই দরকার বলে আমি মনে করি। উপরন্তু দেশের অন্যান্য জেলার অধিবাসীরা সিলেটের দু’একটি অঞ্চল সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন এই গ্রন্থটি থেকে। অন্যদিকে সিলেটের অধিবাসীরা নিজ জেলার একজন গুণী ও কৃতী সন্তানকে চিনতে পারবেন। আমি তাঁর বইটির বহুল প্রচার কামনা করছি। তিনি এরকম আরও দু’একটি বই লিখে পাঠকদের আনন্দ সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করছি।

রাজ্জাক হাওলাদার, মুক্তিযোদ্ধা, হেমায়েত বাহিনী। লেখক ও গায়ক।