• প্রজ্ঞার আলোকিত ভুবনে সুধীর সাহা

    জীবন মানে অনেকগুলো দিন, মাস আর বছর অতিক্রম করে যাওয়া। এই যাওয়ার পথের গল্পে থাকে দর্শন আর প্রজ্ঞা। প্রতিটি মানুষ যেমন আলাদা, তেমনি আলাদা তাদের জীবনবোধ। সেইজন্যই একজন মানুষের জীবনের গল্প বা দর্শন আরেকজন মানুষকে দিতে পারে অন্য জীবনবোধ, যেখানে এক জীবনে অনেক জীবন যাপন করার আনন্দ থাকলেও যাপিত জীবনের বেদনা থাকে না।

  • ‘আমার যত কথা’– একটি আনন্দ-বেদনার কাব্য

    জীবন বয়ে চলা নদীর মতো। এই নদীর কূলে কূলে কতনা মানুষ বাস করে; আর সেই মানুষদের সাথে কত হাসি আনন্দ দুঃখ বেদনার সম্পর্ক। সেই মানুষদের ভালোবাসা, অভিমান, রাগ, দুঃখ, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কাটানো জীবনের আখ্যান লিখেছেন ড. ইসমেত আরা মুন তার ‘আমার যত কথা’ গ্রন্থে । ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ হিউবার্ট স্যামুয়েল বলেছিলেন, “এন অটোবায়োগ্রাফি ইজ দ্যা স্টোরি অফ হাও এ ম্যান থিংক্স হি লিভড।”

  • চলচ্চিত্রের জন্য মনিস রফিকের ভালোবাসা

    অসীম সম্ভবনার অধিকারী মানুষের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় হাজারো গুণাবলীর সন্ধান। মানুষের গুণাবলী বিকশিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন যথাযথ পরিবেশ এবং পরিচর্যা যেটা অনেক সময় দুর্লভ। তারপরও দুর্গম পথে হেঁটে হেঁটে কোনো কোনো মানুষ একই সাথে লেখক, গায়ক, নায়ক হয়ে ওঠেন। হয়ে ওঠেন অনন্য, হয়ে ওঠেন আরাধ্য। তেমনি একজন মানুষ মনিস রফিক।

  • মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে শহিদুল ইসলাম মিন্টুর ‘একাত্তর প্রতিদিন’

    একটি জাতির ইতিহাস শুধু তার বিজয়ের গল্প নয়, বরং তা তার আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও চেতনার ধারক। যুদ্ধ যেমন একটি ভূখণ্ডের স্বাধীনতা এনে দেয়, তেমনি সেই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলে জাতির মানসিক বিকাশ ও সাংস্কৃতিক চর্চা। তাই দেশজয়ের যুদ্ধের চেয়েও কঠিন হয়ে দাঁড়ায় মানুষকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার যুদ্ধ। এই যুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার হলো রুচিশীল ও সৃজনশীল বিনোদন।

  • উৎস থেকে পরবাস: কর্মময় এক জীবনের বয়ান

    “উৎস থেকে পরবাস” লেখক সুব্রত কুমার দাসের আত্মজৈবনিক কথোপকথন গ্রন্থ।  সুব্রত কুমারের সাথে কথোপকথনটি করেছেন দেবাঞ্জনা মুখার্জি ভৌমিক। আর সে কারণে বইয়ের প্রচ্ছদে দেবাঞ্জনার নামের আগে  “আলাপনে” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। বইটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেবাঞ্জনার বিভিন্ন প্রশ্নের  উত্তর দিয়েছেন লেখক সুব্রত কুমার দাস। লক্ষণীয় যে,  দেবাঞ্জনার প্রশ্নগুলি কালানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়েছে। ফলে সুব্রত কুমারের দেয়া উত্তরগুলি একটি আত্মজৈবনিক গ্রন্থে রূপ নিয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে ঢাকার মূর্ধন্য প্রকাশনী।  ইতোমধ্যে বইটি এ বছরের ঢাকা, কোলকাতা ও আগরতলা বইমেলায় উপস্থাপিত হয়েছে।

  • রূপকথা আর সাহিত্যে কানাডার ফুল

    পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসগুলোর মধ্যে ফুল অন্যতম। ফুলের জন্য রয়েছে মানুষের অপরিসীম মুগ্ধতা। তাই সকল পবিত্র ও সুন্দরের সাথে ফুলের তুলনা করা হয়। পবিত্র কোরানে বেহেস্তের সৌন্দর্য বর্ণনায় ফুলের উল্লেখ করা হয়েছে। সকল দেবতাকে তুষ্ট করতে ফুল দিয়েই পূজা করা হয়। কবির গানে প্রিয়ার জন্য থাকে ফুলের উপমা। সামাজিক সকল আয়োজনে ফুলের জন্য রয়েছে বিশেষ স্থান। উন্নত দেশগুলোতে সিটি করর্পোরেশন সারা বছর ফুল দিয়ে শহরসজ্জার জন্য বড় বাজেট বরাদ্দ করে থাকে। শুধু তাই নয়, সামান্য আয়ের মানুষরাও তাদের বাড়ির বাগান সাজিয়ে তোলেন অনেক রকম ফুলে যার জন্য ব্যয় হয় অনেক অর্থ ও শ্রম।

  • পাহাড়চূড়া ছোঁয়ার গল্প ‘স্বপ্নের ইমিগ্রেশন’

    সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর চিৎকারে যন্ত্রণা থাকে … নাকি থাকে আনন্দ? এই প্রশ্নের কোন সর্বজনগৃহীত উত্তর জানা না গেলেও একথা অনস্বীকার্য যে সৃষ্টিতে আনন্দ থাকলেও তার শুরুটা হয় যন্ত্রণা দিয়ে। সেই যন্ত্রণা কিছুটা প্রকাশিত হয়, কিন্তু অনেকটাই আবার অজানা থেকে যায়। নতুনদেশ কানাডাতে বাস করতে আসা তমাল আর তিথির নতুন জীবন গড়ার আনন্দ-বেদনা, জয়-পরাজয় আর পাওয়া না-পাওয়ার গল্প নিয়ে উপন্যাস জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিনের ‘স্বপ্নের ইমিগ্রেশন’। দেশে-বিদেশে, অতীতে বা বর্তমানে জীবন কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ নয়। কন্টকময় পথে হেঁটে রক্তাক্ত পায়ে যারা উঠে দাঁড়ায়,  তারাই পাহাড়চূড়া ছুঁতে পারে। হিন্দি প্রবাদ আছে ‘যো জিতা ওহি সিকান্দার’।  নতুন দেশে বাস করতে আসা অভিবাসীদের তাই সকল বৈচিত্র্য মেনে নিয়ে, সকল আঘাত সহ্য করে এগুতে হয় এবং একই সাথে নিজেকে গড়ে নিতে হয় নতুন করে। তখনই কেবল স্বপ্ন রূপ নেয় বাস্তবতায়।   

  • অটিসম কোনো অভিশাপ নয় একটি সময়োপযোগী গ্রন্থ

    বিজ্ঞান প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসাশাস্ত্র। আর তাই মনের রোগ আর শরীরের রোগ এখন আলাদা করেই নির্ণয় করা হচ্ছে। মনের রোগ নিয়ে কাজ করতে গিয়েই মানুষের একটি বিশেষ মানসিক গঠনের সাথে বিজ্ঞানীদের পরিচয় হয়।এই মানসিক গঠনটি যাদের থাকে তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এই বাধাগ্রস্ততাকে অটিসম বলে। অটিসম কোনো রোগ নয়, এটি একটি বিশেষ মানসিক গঠন। কাজেই এটি শতভাগ নিরাময়ের কোনো ওষুধ না থাকার কারনে থেরাপির মাধ্যমে সমস্যাক্রান্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপযুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

  • স্বপন বিশ্বাসের ‘কুড়াই পথের নুড়ি’- ভ্রমণের ছোটগল্প

    সাহিত্যিক আনন্দের পাশাপাশি নতুন কোনো স্থানের ভৌগোলিক বিবরণ, ইতিহাস, স্থানটির সামাজিক রীতিনীতি, মানুষের জীবনযাত্রা ও আরও অনেক তথ্য জানার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে ভ্রমণ সাহিত্য ধীরে ধীরে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯০ সালে মা সারদাকে প্রণাম করে তাঁর ভ্রমণ শুরু করেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদিগকে ভ্রমণ করিতেই হইবে, আমাদিগকে বিদেশ যাইতেই হইবে … যদি আমাদিগকে যথার্থই পুনরায় একটি জাতিরূপে গঠিত হইতে হয়, তবে অপর জাতির চিন্তার সহিত আমাদের অবাধ সংস্রব রাখিতেই হইবে।’ স্বামীজীর এই বাণীর মর্মকথায় আছে ভ্রমণের অনুপ্রেরণা ও আব্যশিকতা। একারণেই ভ্রমণকে 

  • ননী গোপাল দেবনাথের কানাডা নিয়ে বই

    নাগরিক সুবিধা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, শিক্ষার সুব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবার মান, লিঙ্গসমতা, জননিরাপত্তা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা প্রভৃতিসহ আরো বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পরিমাপ মানদণ্ডের ভিত্তিতে কানাডা বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য দেশ। দেশটির শিশুজন্মহার নিম্নগামী হওয়ায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে কানাডা অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিবছর অভিবাসী গ্রহণ করে থাকে। তাই প্রতিবছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মানুষ কানাডায় এসে স্থায়ী বসতি স্থাপন করে। এছাড়াও কানাডা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক বা মানবিক বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আপদকালীন সহায়তা প্রদানসহ দীর্ঘমেয়াদি সহাযতা প্রদান করে সুনাম অর্জন করেছে। ফলে কানাডা সম্পর্কে বাঙালি পাঠকের আগ্রহ অপরিসীম এবং প্রতিনিয়তই এই আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

  • কাজী হেলালের কবিতায় ইতিহাস

    চেতনায় উজ্জ্বল উদ্দীপনা আর মগজের কোষে ছড়িয়ে থাকা ঘটনা প্রবাহকে হৃদয়ের আবেগ আর ভালবাসা দিয়ে একসাথে গেঁথে কবিতায় প্রকাশ করতে পারেন কাজী হেলাল। কবিতায় ইতিহাস উপস্থাপন বিষয়টি নিয়ে কবি টি এস এলিয়ট ‘ট্র্যাডিশন এন্ড দ্যা  ইন্ডিভিজুয়াল ট্যালেন্ট’ (Tradition and the Individual Talent) প্রবন্ধে বলেছেন ‘যদিও সমসাময়িক ঐতিহাসিক বোধ অস্থায়ী, কিন্তু এই উপাদানটিই একজন লেখককে ঐতিহ্যগত করে তোলে এবং একইসাথে এটিই একজন লেখককে সময়ের সাথে তার স্থান সম্পর্কে, তার নিজের সমসাময়িকতা সম্পর্কে সবচেয়ে তীব্রভাবে সচেতন করে তোলে’ কাজেই আধুনিক সচেতন মানুষ যখন সাহিত্য রচনা করেন, সেই সাহিত্যে সমকালীন ইতিহাস ছায়া ফেলে; লেখক যে সময়ে বাস করেন, সেই সময়টিই লেখকের লেখায় জীবন্ত হয়ে ওঠে।

  • রোকসানা পারভীন শিমুলের নদীর দুইপারের মানুষের গল্প

    প্রতিদিনের যাপিত জীবনের আশেপাশে অনেক গল্প থাকে। সেসব গল্প কখনও চোখে দেখা যায়, কখনও কানে শোনা যায়, আবার কখনও কখনও সেই গল্প অনুভূতির দরজায় কড়া নেড়েও যায়। একজন লেখক সেই সব কাহিনি সাদাকালো অক্ষরে লিখে রাখেন যা পাঠককে দেয় স্বপ্নের মতো গল্পের জগৎ, দেয় নতুন ভাবনা। রোকসানা পারভীন শিমুল নদীর মতো বয়ে চলা জীবনের দুই কূলে বাস করা মানুষের সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনার আখ্যান লিখেছেন তাঁর ‘গল্পগুলো মনের তাকে ছিল’ গ্রন্থে। বইটিতে মোট ১৫টি ছোটগল্প আছে যেখানে উঠে এসেছে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প, বাবা-মায়ের জন্য সন্তানের ভালবাসার আঁকুতি, শশুড়বাড়ির আত্মীয়দের ভালমন্দ ব্যবহারের চিত্র, পরিবার আর সমাজের নিষ্ঠুর নিয়মের কষাঘাতে ভালবাসার আত্মহুতির করুণগাথা, কর্মজীবী নারীর রোজনামচা এবং আরো কয়েক ধরনের গল্প।

  • ‘নিভৃত পূর্ণিমা’: দিনের আলোয় রাতের তারার গল্প

    মানুষের পুরোটা জীবন জুড়ে কি একটাই গল্প থাকে?  নাকি জীবনের বাঁকে বাঁকে  গল্প থাকে? এই প্রশ্ন পাঠকেরা হয়তোবা করেন না, কিন্তু একজন ঔপন্যাসিক এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যান তার উপন্যাসে। অনেক চড়াই উৎরাই,  অনেক চাওয়া পাওয়া,  অনেক ঘাত প্রতিঘাত ঠেলে এগিয়ে চলা জীবনের কোথাও কোথাও  লুকানো থাকে আনন্দ বা বেদনা, যা হয়তো দেখা যায় না কিন্তু সেই আনন্দ বেদনার গল্প কেউ কেউ  পুষে রাখে হৃদয়ের মখমলের কৌটায়। সেই গল্প মানুষের মনের নিভৃত কোঠায় পূর্ণিমার অপার্থিব জোৎস্না ছড়িয়ে যায়। পূর্ণেন্দু পত্রী লিখেছিলেন, “ধরো কোন একদিন যদি খুব দূরে ভেসে যাই/ আমারও সোনার কৌটো ভরা থাকবে প্রতিটি দিনের/ এইসব ঘন রঙে, বসন্ত বাতাসে, বৃষ্টি জলে।/ যখন তখন খুশি ওয়াটার কালারে আঁকা ছবিগুলো/ অম্লান ধাতুর মতো ক্রমশ উজ্জ্বল হবে সোহাগী রোদ্দুরে।“

  • মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে প্রেমের উপন্যাস

    বাংলাদেশের একটি মফস্বল শহর  চাঁদপুরের স্কুলপড়ুয়া অঞ্জন আর মঞ্জুলী’র প্রথম ভালবাসার অনুভূতি দিয়ে উপন্যাসের শুরু। একটু চোখের দেখা, একটু হাসি, ভুল করে হাতে হাত ছুঁইয়ে দিয়ে হালকা ইশারায় প্রেম।  মুরুব্বীদের পাহারার মাঝেও লুকোচুরি করে করে এগিয়ে যায় কিশোর-কিশোরীর প্রেম। এমনি সময় চলে আসে রক্তঝরা একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে জীবন বাঁচাতে আরো অনেক পরিবারের মত অঞ্জনের পরিবারও মফস্বল ছেড়ে প্রত্যন্ত গ্রামে চলে যায়। আর মঞ্জুলীর পরিবার চলে যায় ভারতের শরণার্থী শিবিরে। 

  • বাদল ঘোষের কাব্যগ্রন্থ “সহাস্য উল্লাসে আজীবন” অকপট স্পষ্টতার উচ্চারণ

    অপুর্ব কাব্যময়তার মধ্য দিয়ে সমকালীন জীবনের নানা জটিলতার মাঝে চমৎকার আর সহজ আশাবাদ প্রকাশ করে কেউ কেউ কবিতা লিখতে পারেন। বাদল ঘোষ তেমনি একজন কবি। তাঁর কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশ, আশাবাদ, অধ্যাত্ববাদ, প্রবাস জীবনের অনন্য নিঃসঙ্গতা এবং স্মৃতি। তাঁর কবিতার অপূর্ব চিত্রকল্প পাঠককে অবলীলায় বেড়াতে নিয়ে যাবে দূরের কোন স্টেশনে অথবা ভালবাসামাখা কোন গ্রামে অথবা বরফের একাকী কোনো শহরে।

  • অতনু দাশ গুপ্তের ‘গল্পেসল্পে কিছুক্ষণ’

    কোন উপকথা বা পৌরাণিক গল্প বা কোন রূপকথার গল্প শুনে শুনে বাংলাভাষী পাঠকের ছেলেবেলা কেটে গেলেও বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্প লেখার চর্চা তত বেশী নয়, যদিও বর্তমান সময়ের ব্যস্ত পাঠক ছোটগল্প পড়তে পছন্দ করেন। এই প্রেক্ষাপটে অতনু দাশ গুপ্তের ‘গল্পেসল্পে কিছুক্ষণ’ বইটি খুব চমৎকার একটি উদাহরণ। বইটির ১২টি গল্প পাঠককে ঘুরিয়ে আনবে ১২টি ভুবন থেকে। নতুন দেশের নানান গল্প, অপরূপ দৃশ্যাবলীর কাব্যময় বর্ণনা, পারিবারিক ভালোবাসা, বন্ধুত্বের আনন্দ, সমাজ ও জীবনদর্শনের পাশাপাশি লেখক তাঁর নিজের বাস্তব কিছু অভিজ্ঞতাও বলেছেন এই গল্পগুলোতে।

  • এলিনা মিতার কবিতা হিরন্ময় মনের কাব্য

    আধুনিক এই জটিল সময়ে জীবনের অজস্র টানাপোড়েন, নিঃসঙ্গতা, বেদনা, হতাশা, দ্রুত শিল্পায়নে বদলে যাওয়া মানুষের বিপ্রতীপ মুখাবয়ব আর পুঁজিবাদী সমাজের পীড়নে ক্লিষ্ট জীবনে করোটিতে ভাবনার ইন্দ্রজাল বিছিয়ে কবিতা রচনা করা যায়। সেই কবিতায় থাকে দ্রোহ আর বহমান এই জীবন থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। ‘হিরন্ময় পাখি মন’ গ্রন্থে কবি এলিনা মিতা আশা-নিরাশা, একাকিত্ব, হতাশা, মুক্তির প্রত্যাশা আর নস্টালজিয়ার ছবি এঁকেছেন। ইংরেজ কবি টি এস এলিয়ট বলেছেন, ‘কবিতা আবেগের প্রকাশ নয়, বরং আবেগ থেকে বের হয়ে আসা; এটি ব্যক্তিত্বের প্রকাশ নয়, ব্যক্তিত্বকে সর্বজনীন করে তোলা।‘ অর্থাৎ কবিতায় আবেগ থাকলেও কবিতায় প্রকাশিত বার্তা স্থান-কালের উর্ধে উঠে জীবনের এক চরম বাস্তবতা প্রকাশ করে।

  • আকবর হোসেনের ‘অনুভবের বিভূতিতে’ ঐশ্বরিক ভাবনার স্বতঃস্ফূর্ত কবিতা

    ‘আত্মপরিচয়’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘যেটা লিখিতে যাইতেছিলাম সেটা সাদা কথা, সেটা বেশি কিছু নহে – কিন্তু সেই সোজা কথা, সেই আমার নিজের কথার মধ্যে এমন একটা সুর আসিয়া পড়ে, যাহাতে তাহা বড় হইয়া ওঠে, ব্যক্তিগত না হইয়া বিশ্বের হইয়া ওঠে।’ মহৎ সাহিত্যকর্মগুলি অনেক সময়ই লেখকের ব্যক্তিগত গল্প। কিন্তু সেই গল্প বলার দক্ষতা ও দর্শনের বিচারে সেটি মহৎ সাহিত্যকর্ম হয়ে উঠে। আকবর হোসেনের ‘অনুভূবের বিভূতিতে’  গ্রন্থটিতে তাঁর নিজের জীবন ও কাছাকাছি থাকা মানুষদের জীবনের গল্পের দার্শনিক প্রকাশ ঘটেছে। লেখকের জ্ঞান, প্রজ্ঞা , উপস্থাপন-কৌশল ও ভাষা দক্ষতার কারণে এইসব ব্যক্তিগত ঘটনাগুলি হয়ে উঠেছে নৈর্ব্যক্তিক।